ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গত দুই বছরেও হয়নি: তৃণমুলে ক্ষোভ

Chotrodol-300x141বিশেষ প্রতিনিধি :
দুই বছরেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে পারেনি জেলা ছাত্রদল। ৭ জনের আংশিক কমিটি দিয়ে ঝিমিয়ে ও কাগজে-কলমে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার নির্দেশ থাকলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতেকরে তৃণমুলে দিন দিন বাড়ছে হতাশা ও ক্ষোভ। পাশাপাশি উপেক্ষিত হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা। সেই সাথে অভিযোগ উঠেছে, জেলা ছাত্রদলের সাত সদস্যের এই আংশিক কমিটির ৫ জনের ছাত্রত্ব নিয়েও।
২০১৪ সালের ১ জুলাই জেলা ছাত্রদলের সাত সদস্যের (আংশিক) কমিটি অনুমোদন দেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব।
ঘোষিত কমিটিতে রাশেদুল হক রাসেল সভাপতি. সরওয়ার রোমন সিনিয়র সহ-সভাপতি, আবদুর রউফ সহ-সভাপতি, মনির উদ্দিন মনিরকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এছাড়া আলাউদ্দিন রবিন, জাহেদুল ইসলাম লিটন যুগ্ম সম্পাদক এবং শাহীনুল ইসলাম শাহীন সাংগঠনিক সম্পাদক হন।
ওই সময় কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে এক মাসের মধ্যে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা এবং সকল সাংগঠনিক ইউনিটের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কেন্দ্রীয় সংসদের নিকট জমা দিতে নতুন কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রায় দুই বছর হয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে দিন দিন হতাশা ও ক্ষোভের দানা বাঁধছে। বিশৃংখলার আশঙ্খা তৈরি হচ্ছে শহীদ জিয়ার হাতে গড়া দেশের সর্ববৃহৎ এই ছাত্র সংগঠনটিতে।
অভিযোগ উঠেছে, জেলা ছাত্রদলের সাতজনের কমিটিতে ৫ জনের ছাত্রত্ব নেই। যে দুইজনের ছাত্রত্ব আছে বলা হচ্ছে তাদের বিষয়েও সন্দিহান অনেকেই।
কক্সবাজার শহর ছাত্র দলের এক যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, আমাদের শহর ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি হয়েছে প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় শহর ছাত্রদলের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। ছাত্রদলের একাধিক তৃণমূল নেতা বেশ কয়েকবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবিতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। একই সাথে ছাত্রদলের তৃণমূলের ব্যানারে মাঠে নামার হুঁশিয়ারি দেন। কিন্তু এরপরও কোন সিন্ধান্ত দেয়নি জেলা ছাত্রদলের নেতারা। এই অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে যোগ্য নেতৃত্বহীনতায় ভূগবে ছাত্রদল।
সিটি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আংশিক কমিটি গঠিত হওয়ার পর কেন্দ্র থেকে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হলেও জেলা ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কর্ণপাত করছেন না। আমার মনে হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হতে হতে কেন্দ্র থেকে আবার নতুন কমিটির ঘোষনা আসবে।
সরকারি কলেজ ছাত্রদলের এক তৃণমূল নেতা বলেন, সরকারি কলেজ ছাত্রদলের বেহাল অবস্থ যা বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের এখন একটাই দাবি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা ছাত্রদলের পূর্ণঙ্গ কমিটি ঘোষনা দেয়া হোক।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ১২১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা ছাত্রদলের একটি কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সমন্বয় করছেন।
তবে টাকার বিনিময়ে জেলা কমিটিতে স্থান দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতা। তাদের দাবি, পদ দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়া হচ্ছে। অনেকেই দুই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। টাকার অংক কম হওয়ায় বাদ দেয়া হচ্ছে অনেককে। কিন্তু অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মনির উদ্দিন মনির।
তিনি বলেন, এখানে টাকার কোন প্রশ্নই আসে না, যারা জার পথে ছিল তারাই কমিটিতে স্থান পাবে। টাকার বিনিময়ে ছাত্রদলের কমিটিতে স্থান পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যারা পদ বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় আছে তারাই এসব অপ-প্রচার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শ ও বেগম জিয়ার নির্দেশনায় ছাত্রদল পরিচালিত হয়। দলীয় আদর্শ ও নীতিমালার বাইরে ছাত্রদলে স্থান নেই।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে দেরী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল হক রাসেল বলেন, কমিটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে, এই মাসের মধ্যেই ঘোষনা করা হবে। যাদের কমিটিতে রাখা হবে তাদেরকে অবশ্যই যোগ্য ও ত্যাগী কর্মী হতে হবে যারা ছাত্রদলের দঃসময়ে রাজ পথে ছিলেন। আর তাই তাদেও সম্পর্কে আরো তথ্য সংগ্রহ চলছে একারনেই একটু দেরি হচ্ছে।
রাসেলের ভাষ্যমতে, যোগ্যতা সম্পন্ন ও মেধাবীদের নিয়েই জেলা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দলের দুঃসময়ে যারা মাঠে ময়দানে তৎপর ছিল তাদের মূল্যায়ন করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: